জাকির নায়েককে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করলো এনআইএ
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
ভারতের বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা জাকির নায়েক তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ছড়াতেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার একটি বিশেষ আদালতে দায়েরকৃত চার্জ শিটে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ’র পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পরেই জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতায় উসকানির অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, হামলায় যুক্ত দুই জঙ্গি জাকিরের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। বিষয়টি সামনে আসার পরই জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা।
১৫১ জন সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে এবং ইন্ডিয়ান পেনাল কোড ও আনল’ফুল অ্যাকটিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারায় জাকির নায়েক এবং তার মালিকানাধীন নিষিদ্ধ ঘোষিত প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্স ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) এবং হারমোনি মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে এনআইএ।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়, ‘জাকির নায়েক ইচ্ছাকৃত ও বিদ্বেষপূর্ণভাবে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অণ্ডওয়াহাবি মুসলিমদেরকে অপমান করেছেন। বিশেষ করে শিয়া, সুফি এবং বারেলভিদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করতে ইচ্ছে করে তিনি এ কাজ করেছেন।’
জঙ্গি কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং তাদের অর্থ দেওয়া ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের ১৮ নভেম্বর জাকির নায়েকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে (আইআরএফ) পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট এর আওতায় জাকিরের এনজিওকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পরেই জাকির নায়েক বিদেশে চলে যান।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজির হওয়ায় জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ) আইনে জাকিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন মুম্বাইয়ের এনআইএর বিশেষ আদালত। চলতি বছরের জুলাই মাসে জাকির নায়েকের আন্তর্জাতিক পাসপোর্টটিও বাতিল করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে এনআইএর তরফে তাকে একাধিকবার সমন পাঠানো সত্ত্বেও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজির না হওয়ার কারণে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচারও বন্ধ করা হয়।